নতুন জামায় পুরনো বাকশাল: রিজভী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
জাতির জনকের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদযাপনের শোভাযাত্রায় রাষ্ট্রের কর্মচারীদের অংশ নিতে বাধ্য করে সরকার ‘অন্যায়’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকায় এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের বাকশালের মতো এখন শেখ হাসিনার সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ‘রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে’। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যে ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, তা সম্প্রতি ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অফ দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত হয়েছে। এই স্বীকৃতি উদযাপনে গতকাল শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলায় শোভাযাত্রা-সমাবেশের কর্মসূচি পালিত হয়, যাতে অংশ নিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে।
এই নির্দেশনার বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, একটি রাজনৈতিক বিষয়ে সমাবেশ বলি, সংবর্ধনা বলি, এখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপনি চিঠি দিয়ে, ধমক দিয়ে পাঠাচ্ছেন। এটা অন্যায়। এটা গণতান্ত্রিক দেশ নয়, এটা একদলীয় দুঃশাসনের দেশ। আবার নতুন চমক নিয়ে, নতুন জামা পড়ে, নতুন পোশাক পরে শেখ হাসিনার অধীনে বাকশালের নবজন্ম হল।
বঙ্গবন্ধুর একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশালের সঙ্গে তুলনা করে বিএনপি নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার বাবা বাকশাল করেছিলেন, তখন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনাবাহিনী, বিডিআর, পুলিশের কর্মকর্তাদের যোগদান করতে হত।
“তার কন্যা শেখ হাসিনার আমলে আবার আজকে নতুন বাকশাল দেখছি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পলিটিক্যাল মিটিংয়ে যেতে হচ্ছে, না হয় তাদের চাকরি থাকবে না, বেতন কেটে নেওয়া হবে।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশনাকে ‘সন্ত্রাসী নির্দেশ’ আখ্যায়িত করে রিজভী বলেন, “কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের এভাবে কোনো রাজনৈতিক সভায় যোগদান করতে হয় না।
“এখানে এখন এমন একটি অবস্থা যে এখানে কোর্ট আমার, প্রশাসন আমার, পুলিশ আমার। আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো কথা নেই, কোনো রঙ নেই। আইন একটা, শেখ হাসিনার আইন, এখানে অন্য কোনো আইন চলবে না।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ পিরোজপুর জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে জেলা সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বাবুলের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রিজভী।
সংগঠনের সভাপতি হিরু রহমান হিরন মোল্লার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, শাহজাহান মিলন, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, পিরোজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বক্তব্য রাখেন।